উভয়পক্ষের কর্তব্য – নিয়ে আজকের আলোচনা। এই পাঠটি “বীমা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা” বিষয়ের ” বীমার মৌলিক ও সাধারণ আধেয়সমূহ ” বিভাগের একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ।
উভয়পক্ষের কর্তব্য
বীমাযোগ্য স্বার্থ হচ্ছে – বীমাকৃত বিষয়বস্তুর উপর বীমাগ্রহীতার এমন একটি আর্থিক স্বার্থ যে, বীমাকৃত বিষয়বস্তুর বিদ্যমানতা বা অস্তিত্বে বীমাগ্রহীতার স্বার্থ রক্ষিত হয় অথবা বীমাগ্রহীতা উপকৃত হন এবং বিষয়বস্তুর মৃত্যুতে বা বিনাশে অথবা ক্ষতিতে বীমাগ্রহীতার স্বার্থ বিনষ্ট হয় অথবা বীমাগ্রহীতা ক্ষতিগ্রস্ত হন
“The insurable interest is the pecuniary interest whereby the policy-holder is benefited by the existence of the subject- matter and is prejudiced by the death or damage of the subject-matter” M N Mishra
একটি বীমাচুক্তি গঠনের জন্যে যেসব উপাদান একান্ত অপরিহার্য বীমাযোগ্য স্বার্থ হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম; এমনকি, বীমাযোগ্য স্বার্থ বীমাচুক্তি গঠনের জন্যে মূল উপাদান বললেও অত্যুক্তি হয় না। কেননা, বীমাযোগ্য স্বার্থ না থাকলে বীমা চুক্তি গঠনের প্রশ্নই আসে না। তদুপরি, যে বিষয়বস্তু রক্ষার্থে আর্থিক প্রতিদান বা সেলামীর বিনিময়ে কোন মানুষ বীমাগ্রহণ করতে যাবেন তার উপর কোন আর্থিক স্বার্থই যদি না থাকে, তাহলে কেন তিনি চুক্তি করতে যাবেন।
নিছক খেয়াল-খুশী অথবা ভাবাবেগের বশে তা হতে পারে বটে; কিন্তু, বীমাকারীতো তা মেনে নিবেন না। কারণ, বীমাতো কোন দ্যুতক্রীড়ার অথবা ভাবাবেগ প্রশমনের বিষয় নয়, এটি একটি কারবারী কার্যক্রম এবং বীমাকারী একটি যৌক্তিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়েই শুধু যথাযোগ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও অনুসন্ধানের পর আর্থিক প্রতিদানের বিনিময়ে ঝুঁকি গ্রহণের প্রতিশ্রুতিতে আবদ্ধ হন। সুতরাং, বীমাচুক্তি গঠনের জন্যে বীমাযোগ্য স্বার্থের বিদ্যমানতা শুধু আবশ্যকই নয় অত্যাবশ্যক অথবা একান্ত অপরিহার্য।
উভয়পক্ষের কর্তব্য
বলা বাহুল্য, বীমাচুক্তির একটি অন্যতম অপরিহার্য উপাদান হলো চূড়ান্ত সন্ধিশ্বাস এবং চূড়ান্ত সদ্বিশ্বাস বলতে বীমাচুক্তি গঠন ও পালনে সর্বোচ্চ বিশ্বস্ততার নীতি বা মতবাদকেই বুঝায়। আর, এ নীতিই বলে দেয় যে, বীমাচুক্তি গঠন ও পালনের জন্যে চুক্তির বিষয়বস্তু সম্পর্কে সম্পূর্ণ ও সঠিকভাবে সকল সত্য ও তথ্যাদি প্রকাশ করতে বা জানিয়ে দিতে হবে।
অর্থাৎ, বাস্তব তথ্যাদি (material facts) গোপন করা যাবে না, সে সম্পর্কে বাড়িয়ে বলা যাবে না এবং মিথ্যা বর্ণনা, প্রতারণা ইত্যাদির আশ্রয় নেয়া যাবে না। কেননা, তাতে বীমাচুক্তিকে অনাকাঙ্খিতভাবে প্রভাবিত করবে এবং এভাবে চুক্তি গঠিত হলেও তা বাতিল বলে গণ্য হবে— সেইসাথে বিশ্বস্ততা ভঙ্গকারী পক্ষকে আইনতঃ অভিযুক্ত হতে হবে।
আরও পড়ূনঃ