আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় কিস্তি নির্দ্ধারণ বা হিসেবকরণ যা জীবন বীমা অধ্যায়ের অন্তর্ভুক্ত। সঠিক কিস্তি, নির্ধারণ বীমা প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের অন্যতম পূর্বশর্ত। কেননা, সঠিক ও প্রত্যাশিত কিস্তি বীমাকারী ও বীমাকৃত বা বীমাগ্রহীতা উভয়ের জন্যে একাধারে ও পারস্পরিক সুবিধাজনক।
অর্থাৎ, একদিকে যেমন বীমাকারীর দিক থেকে বীমা কিস্তির ধরণ ও পরিমান এমন হওয়া বাঞ্ছনীয় যাতে তার মুনাফা অর্জনের পথ প্রসস্ত হয়, অন্যদিকে তেমনি বীমাগ্রহীতার জন্যেও বীমাকিস্তির ধরণ ও পরিমাণ এমন হওয়া উচিৎ যা তার পক্ষে বহনযোগ্য, উপযোগীও আকর্ষণীয় হয়।
কিস্তি নির্দ্ধারণ বা হিসেবকরণ
উপরন্তু, কিস্তি নির্ধারণের ক্ষেত্রে জটিলতাও রয়েছে অনেক। কেননা, দিন যতই যাচ্ছে নতুন নতুন বীমাপত্রের উদ্ভব ঘটছে যা প্রকৃতি ও মেয়াদে বিভিন্ন রকম।
বিভিন্ন ধরনের রীমাপত্রে কিস্তি বা সেলামী নির্ধারণের পদ্ধতি ও বিভিন্ন। আরও কিস্তিও হয়েছে একই কারণে বিভিন্ন। তবে, জীবন বীমা, কিন্তুি প্রথমতঃ এবং মূলতঃ দুধরনের। যথাঃ – (১) নট কিত্তি (Net Premium) ও (২) মোট কিন্তুি (Gross Premium) উক্ত দুধরনের কিস্তিই আবার দুধরনের হতে পারে। যথ (ক) একক বা এককালীন অথবা একমাত্র কিত্তি (Single Premium) ও (খ) সম • কিস্তি (Level Premium)।
কোন বীমাপত্রে বীমাকৃত পুরো মেয়াদের মধ্যে যদি একটিমাত্র কিস্তি প্রদান করা হয়, তাহলে তাকে একক বা এককালীন কিন্তুি বলে। আর যদি কোন বীমাপত্রে সমপরিমানের কতকগুলি কিস্তি প্রদানের ব্যবস্থা থাকে তাহলে তাকে সম – কিস্তি (Level Premium) বলে। সম – কিন্তুি বলতে সাধারণতঃ বার্ষিক কিত্তি বুঝায়। তবে, তা অন্ধবার্ষিক বা ষাম্মাসিক, ত্রৈমাসিক এবং মাসিকও হতে পারে।
উপরোক্ত বর্ণনা থেকে স্বাভাবিকভাবেই বোঝা যাচ্ছে যে-নীট কিত্তি যখন সুধরনের অর্থাৎ, একক ও সম – কিস্তি) হতে পারে, তখন স্বভাবতঃই তা (১) নটি একমাত্র কিত্তি (Net single Premium) ও (২) নীট বার্ষিক বা সম কিস্তি Net level or Annual Prenium – এদুটি সমন্বিত ও পূর্ণ শিরোনামে বিন্যস্ত হতে পারে। ঠিক তেমনিভাবে মোট কিস্তিকেও বিন্যস্ত করা হয়ে থাকে।
তবে, প্রথমেই নটি একমাত্র কিস্তি হিসেব করা হয় এবং তারপর সে হিসেবের উপর ভিত্তি করেই অন্যান্য কিস্তি হিসেব করা হয়। তাই এখানে নীট এককালীন কিস্তি নির্ধারণের জন্যে অনুসৃত পদক্ষেপসমূহ এবং ধারণাসমূহ সম্পর্কে বর্ণনা প্রদান করা হলো।
নীট একমাত্র বীমা কিস্তি হিসেব করার পদক্ষেপসমূহঃ
নীট এককালীন প্রিমিয়াম হিসেব করার ক্ষেত্রে নিম্নে বর্ণিত পদক্ষেপগুলি গ্রহণ করতে হয় :-
১/ প্রথমেই নির্ধারণ করতে হয় বীমা দাবীটি উত্থাপিত হওয়ার প্রেক্ষিত কি (ক) মৃত্যু, না (খ) বেঁচে থাকা, না (গ) উভয়ই
২। বীমাদাবী মেয়াদারস্তে বা মেয়াদাস্তে অথবা বছর বা মেয়াদের মধ্যেই পরিশোধ করতে হবে কিনা তা নিরূপণ করা;
৩।এই বীমাকৃতের বা বীমাগ্রহীতার সংখ্যা নির্ধারণ করতে হয়।
৪। বীমাপত্রের মেয়াদ নিরূপণ করা;
৫। বার্ষিক সম্ভাব্য বীমাদাবীর সংখ্যা,
৬। বার্ষিক বীমাদাবীর মূল্য বা পরিমাণ নির্ধারণ করা
৭। যত বছরের সুদের প্রশ্ন জড়িত তা নিরূপণ করা এবং ১ টাকার বর্তমান মূল্য বের করা,
৮। ভবিষ্যতে প্রদেয় সম্যক বীমাদাবীর বর্তমান মূল্য নিরূপণ করা এব
৯। এভাবে নীট এককালীন বীমাদাবী নিরূপণ করা ( প্রদেয় মোট বীমাদারীর বর্তমান মূল্যকে মোট বীমাগ্রহীতা বা বীমাপত্রের সংখ্যা দ্বারা ভাগ করে)। বলা বাহুল্য যে—বীমাপত্রের প্রকৃতিভেদে প্রিমিয়াম হিসেব করার পদক্ষেপগুলি স্বভাবতঃই কমবেশী ভিন্নতর হয়ে থাকে।
আরও দেখুনঃ