জীবন বীমা ভূমিকা – পাঠটি “বীমা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা” বিষয়ের “জীবন বীমা” অধ্যায়ের একটি পাঠ। বীমা হল অর্থের বিনিময়ে জীবন, সম্পদ বা মালামালের সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতির ন্যায়সঙ্গত ও নির্দিষ্ট ঝুঁকির স্থানান্তর। এর মাধ্যমে ব্যক্তি বা বীমা প্রতিষ্ঠান অর্থের (প্রিমিয়ামের) বিনিময়ে মক্কেলের আংশিক বা সমস্ত সম্ভাব্য ঝুঁকি গ্রহণ করে থাকে। এটি অনিশ্চিত ক্ষয়ক্ষতি এড়ানোর জন্য ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার একটি অংশ।
জীবন বীমা ভূমিকা
বীমা কোম্পানিগুলোকে প্রিমিয়াম প্রদানের মাধ্যমে বীমাকৃত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সব ধরনের সম্ভাব্য ক্ষতির হাত থেকে মুক্ত থাকে এবং অসংখ্য বীমাকৃত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রিমিয়াম সংগ্রহ করে বীমা কোম্পানিগুলো মূলধন বৃদ্ধি করে। বীমাকারী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতা ছাড়াও ব্যাক্তিগতভাবে অর্থ সঞ্চয় করে সম্ভাব্য ঝুঁকির দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকা যায়। বীমা প্রক্রিয়া, ক্ষয়ক্ষতির ধরন এবং ক্ষতিপূরণ নির্ধারণের ক্ষেত্রে কিছু মূলনীতি মেনে চলতে হয়।
জীবন বীমা ভূমিকা
জীবন মানুষের সবচেয়ে প্রিয় সম্পদ। তাইতো, সে জীবন রক্ষা করার জন্যে মানুষের চেষ্টার যেন অন্ত নেই। কেননা, মৃত্যু তাকে প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়ায়। জরা, ব্যাধি, অক্ষমতা এবং অজস্র বিপদ-বিপর্যয় জীবনকে করে দুর্বিষহ, সমস্যা- সংকুল এবং দুঃখ-দুর্দশা ভারাক্রান্ত। এসব কারণেই, মানব জীবনে থাকে এক গভীর অনিশ্চয়তার অন্ধকার।
আর, সে কারণেই মানুষ তার অস্তিত্ব রক্ষার তাগিদে তথা জীবন ধারণ ও যাপনের আকাঙ্খায় সম্ভাব্য ক্ষতি ও অপ্রত্যাশিত অবস্থার বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধের উপায় অনুসন্ধান করতে গিয়ে আবিস্কার করেছে জীবন বীমা (ব্যবস্থা)। অর্থাৎ, মানুষের জীবন-জীবিকার নিশ্চয়তার এক চমৎকার কার্যকর পন্থা হিসেবেই জীবন বীমার উদ্ভব ঘটেছে কালক্রমে। আর, একদিন যে জীবন বীমা অতি ক্ষুদ্রাবয়বে জন্মলাভ করেছিল আজ তা মানুষের হাতেই লালিত-পালিত হয়ে প্রায় পূর্ণাবয়ব লাভ করেছে এবং অঙ্গ সৌষ্ঠবে তা ক্রমাগত আকর্ষনীয়তা অর্জন করছে। জীবন বীমাই এখন সবচেয়ে জনপ্রিয়, বিস্তৃত ও গুরুত্বপূর্ণ বীমা ব্যবস্থা হিসেবে পৃথিবী-ব্যাপী স্বীকৃত ও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
[ গ্রেট বৃটেনে পঞ্চাশের দশকেই এক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে যে, বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহের মোট সম্পত্তির প্রায় ৮০x ভাগ সম্পত্তিই হয়ে গেল জীবন বীমার আওতাধীন। পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও তা প্রায় সমভাবে পরিলক্ষিত হলো। সুতরাং, বাস্তবতার প্রেক্ষিতেই বলা যেতে পারে, মানবসভ্যতা যতদিন বিকশিত থাকবে— জীবন বীমার প্রয়োজন ততদিনই থাকবে— এতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই।]
আরও পড়ুনঃ