ঝুঁকি নিরূপন করার উপায় – পাঠটি “বীমা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা” বিষয়ের “ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা” অধ্যায়ের একটি পাঠ। যেহেতু, ব্যক্তিভেদে ঝুঁকির মাত্রা বিভিন্ন হয়ে থাকে, তত্ত্বগতভাবে অন্ততঃ ভিন্ন ভিন্ন বীমাগ্রহীতার উপর ভিন্ন ভিন্ন বীমা কিস্তি ধার্য্য ও আরোপ করার কথা। কিন্তু, বাস্তবে বীমাগ্রহীতার যত সংখ্যা তত সংখ্যার ভিন্ন ভিন্ন ধরনের বীমা কিস্তি বা সেলামী বির্ধারণ বা ধার্য্য করা সম্ভব নয়। তাই, বাস্তব উদ্দেশ্য সাধন নিমিত্তেই ঝুঁকিকে প্রথমে বিভক্ত ও কতিপয় শ্রেণীভূক্ত করতে হয় এবং তদনুযায়ী বীমা কিস্তি নির্ধারণ বা নিরূপণ করা হয়। এতদুদ্দেশ্যে জীবন বীমার ক্ষেত্রে বীমা ঝুঁকিকে চার ভাগে ভাগ করা যায়ঃ
ঝুঁকি নিরূপন করার উপায়
(১) উত্তম আদর্শিক ঝুঁকি (Super-standard Risk).
(২) আদর্শিক ঝুঁকি (Standard Risk)
(৩) উপ-আদর্শিক ঝুঁকি (Substandard Risk) এবং
(৪) বীমা- অযোগ্য ঝুঁকি (Un-insurable Risk) – এই চারভাগে বিভক্ত ও মাত্রা অনুযায়ী অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

ঝুঁকির পরিমাণ কমবেশী হওয়ার জন্যে কতগুলি বিষয় বিবেচ্য। যথাঃ – (১) বীমাগ্রহীতার বয়স, (২) শারীরিক গঠন, (৩) স্বাস্থ্যগত অবস্থা (8) ব্যক্তিগত ইতিবৃত্ত, (৫) পারিবারিক ইতিবৃত্ত, (৬) পেশা, (৭) আবাস, (৮) ব্যক্তিগত অভ্যাস, (১) নৈতিকতা, (১০) বংশক্রম ও জাতীয়তা, (১১) পুরুষ অথবা নারী, (১২) আর্থিক অবস্থা ইত্যাদি।
এসব বিষয় সম্পর্কে জানার জন্যে বীমাকারী নিম্নে বর্ণিত তথ্যসূত্রসমূহের সাহায্য নিয়ে থাকেন। যথাঃ – (১) আবেদন পত্র, (২) ব্যক্তিগত বিবৃতি, (৩) চিকিৎসকের প্রতিবেদন, (৪) প্রতিনিধির প্রতিবেদন, (৫) পরিদর্শকের প্রতিবেদন, (৬) ব্যক্তিগত বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে সংগৃহীত্ব খবরাখবর, (৭) ব্যক্তিগত চিকিৎসক, (৮) চিকিৎসা তথ্য— সংস্থা ( যদি থাকে), (৯) প্রতিবেশী ও কারবার সহযোগীবৃন্দ এবং (১০) বাণিজ্যিক ঋণ অনুসন্ধান সংস্থা (যদি থাকে) ইতাদি।
ঝুঁকিকে মূল্যায়ন ও শ্রেণীভূক্ত করার জন্যে মূলতঃ দু’টি পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়। যথাঃ – (১) বিচার পদ্ধতি (Judgement Method) ও (২) আঙ্কিক মূল্যায়ন পদ্ধতি (Numerical Rating System)। এ দু’টি পদ্ধতি ব্যবহারের মাধ্যমে বীমাকারী নির্ণয় করেন প্রস্তাবিত বীমাগ্রহীতার জীবনের ঝুঁকি কি পরিমাণের তথা কোন শ্রেণীর।
যে জীবনের ঝুঁকি সাধারণ বা স্বাভাবিক মাত্রার তাকে স্বাভাবিক ঝুঁকি (Standard Risk যে ক্ষেত্রে ঝুঁকি স্বাভাবিক মাত্রার চেয়েও কম, তেমন ঝুঁকিকে উত্তম-আদর্শিক ঝুঁকি (Super-standard Risk) যেক্ষেত্রে ঝুঁকির মাত্রা স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেশী তাকে উপ-আদর্শিক ঝুঁকি (Sub–standard Risk) এবং যেক্ষেত্রে ঝুঁকি এত বেশী যে বীমাকারীর পক্ষে সে ধরনের ঝুঁকি গ্রহণ করা সমূহ ক্ষতির কারণ-শুধু তার নিজের জন্যেই নয়, অন্যান্য বীমাগ্রহীতাদের জন্যেও এরূপ ঝুঁকিকে বীমা-অযোগ্য ঝুঁকি বলা হয়।
আরও পড়ুনঃ