বীমাযোগ্য ঝুঁকির আবশ্যকীয় উপাদানসমূহ

বীমাযোগ্য ঝুঁকির আবশ্যকীয় উপাদানসমূহ – পাঠটি “বীমা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা” বিষয়ের “ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা” অধ্যায়ের একটি পাঠ। ব্যবসা-বাণিজ্য ও জীবন পরিচালনার ক্ষেত্রে আর্থিক ক্ষতি সংক্রান্ত অনিশ্চয়তা বা ক্ষতির সম্ভাবনা তথা ঝুঁকি যে অন্যতম অন্তরায় বা বাধা—এ বিষয়ে কোন ব্যাখ্যার অবকাশ নেই। আর, এ বাধা অতিক্রমনের তাগিদেই সৃষ্টি হয়েছে একটি নবতর বাণিজ্যিক প্রক্রিয়া যা বীমা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা নামে কালক্রমে পরিচিতি লাভ করেছে। আজ তাই, মানুষ ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ঝুঁকি নিতে উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্যে এগিয়ে আসতে হয়েছে অনেকটা নিঃশঙ্ক ও প্রত্যয়ী।

বীমাযোগ্য ঝুঁকির আবশ্যকীয় উপাদানসমূহ

 

বীমাযোগ্য ঝুঁকির আবশ্যকীয় উপাদানসমূহ | ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা | বীমা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা

 

কিন্তু, সেই অনিশ্চয়তা ও ঝুঁকির বিরুদ্ধে নিশ্চয়তাদানকারী ও অঙ্গীকারবদ্ধ সে রীমাকারী তথা সীমাতিষ্ঠানটির তো ভাবার বিষয় আছে যে ঝুঁকি বা আরোপিত হচ্ছে তা কি বীমাযোগ্য অর্থাৎ, মানবিক শক্তি-সামর্থ্যে সংকুলানযোগ্য? সে প্রশ্নেরই জবাব অনুসন্ধানে রীমাযোগ্য ও বীমার অযোগ্য ঝুঁকি চিহ্নিত হয়েছে বীমা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার আলোকে। অর্থাৎ, সকল ঝুঁকিই বীমাযোগ্য নয়।

এখানে উল্লেখ্য যে, বীমাকারী তার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্যে অভিজ্ঞতালব্ধ বিপুল সংখ্যার নীতি (Doctrine of Large Numbers)-কে ভিত্তি হিসেবে বিশ্বাস করে থাকেন। অথচ, এমন সব ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে উক্ত নীতি সন্তোষজনকভাবে কার্যকর হয় না। আবার কোন কোন অবস্থায় তা বেশ ভালোভাবেই কার্যকর হয় এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তা প্রায় আদর্শিক নীতি হিসেবেই পরিগণিত হয়। সুতরাং দেখা যায় যে বীমাযোগ্যতারই বিভিন্ন মাত্রা রয়েছে।

 

insurancegoln Google news
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

[একটি উদাহরণ দিয়ে বিষয়টিকে আরও স্পষ্টতর করা যেতে পারে। যথাঃ – আনবিক শক্তির শান্তিকালীন ব্যবহার এখনও তার শৈশবে অর্থাৎ, এখনও বিরল ঘটনা হিসেবেই পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাই, বীমাকারীগণও অতিমাত্রায় নিয়ন্ত্রিত ক্ষেত্রছাড়া এ বিষয়ে ঝুঁকি গ্রহণে সাধারণতঃ আগ্রহী হননা। এর কারণ খুব সম্ভবতঃ এই যে – আনবিক শক্তির শান্তিকালীন ব্যবহারজনিত ক্ষতি সম্পর্কে একটি দীর্ঘমেয়াদী এবং ব্যাপক পরিসরের পরিসংখ্যান সংগ্রহের তেমন সুযোগ নেই। আর, এ কারণেই বীমাকারীগণ এ বিষয়ে অভিজ্ঞতার অভাবে সঠিকভাবে কোন পূর্বধারণাও নিতে পারেন না।

অধুনা অবশ্য, যেসব ক্ষেত্রে বীমাকারীগণ পারমানবিক শক্তি নিয়ন্ত্রণকারী যন্ত্র বা চুল্লী (Nuclear Reactor) ব্যবহার করছেন এমন সব বীমাগ্রহীতাদের সামগ্রিক অবস্থা সযত্বে পর্যবেক্ষণ করে এবং কঠোর নিরাপত্তা মান রক্ষিত বা নিশ্চিত দেখলেই শুধু তারা আনবিক শক্তিজনিত ক্ষতির অনিশ্চয়তা বা ঝুঁকি বহনে স্বীকৃত হন। এমনকি, এর পরেও রীমাকারীগণ ঝুঁকি বহনের ক্ষেত্রে সীমারেখা টেনে দিয়ে থাকেন।]

পক্ষান্তরে, জীবন বীমার ক্ষেত্রে বিপুল সংখ্যার নীতি বা বিধি চমৎকারভাবে কার্যকর। কেননা, এ ক্ষেত্রে বীমাকারীগণ বহু বছরের অর্জিত অভিজ্ঞতা ও ব্যাপক সংখ্যক উন্নততর মৃত্যুহার পত্নীর আলোকে যথাযোগ্য পরিমাপন ও আস্থা সহকারে ঝুঁকি বহনের চুক্তিতে আবদ্ধ বা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে পারেন।

 

বীমাযোগ্য ঝুঁকির আবশ্যকীয় উপাদানসমূহ | ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা | বীমা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা

 

উপরোক্ত বর্ণনার প্রেক্ষিতে সহজেই অনুমেয় যে কোন ঝুঁকিকে বীমার আওতায় আনতে হলে তার কতগুলি অপরিহার্য বৈশিষ্ট্য বা উপাদান থাকতে হবে।

অর্থাৎ, বীমাযোগ্য ঝুঁকির কতকগুলি আবশ্যকীয় উপাদন কালক্রমে বিবেচিত ও পরিগৃহীত হয়েছে। বীমাযোগ্য ঝুঁকির অপরিহার্য উপাদানসমূহকে দু’টি শিরোনামে শ্রেণী বিন্যস্ত করা যায়। – (১) বীমাকারীর দিক থেকে অবশ্যপূরণীয় বিষয়সমূহ বা আবশ্যকীয়তা সমূহ ও (২) বীমাগ্রহীতার দিক থেকে স্বাভাবিকভাবে প্রয়োজনীয় উপাদানসমূহ।

 

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment