একজন কারখানার মালিক হিসেবে যেসব ঝুঁকির জন্যে বীমা গ্রহন বিধেয়

একজন কারখানার মালিক হিসেবে যেসব ঝুঁকির জন্যে বীমা গ্রহন বিধেয় – পাঠটি “বীমা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা” বিষয়ের “ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা” অধ্যায়ের একটি পাঠ। এ বিষয়ে ব্যাখ্যার তেমন কোন অবকাশ নেই যে— মানুষের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক এবং অর্থনৈতিক জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঝুঁকির মাত্রা ও প্রকৃতি হয় সঙ্গতকারণেই বিভিন্ন। এমনকি, অর্থনৈতিক তথা শিল্প ও ব্যবসা- বাণিজ্যের ক্ষেত্রেই পরিবেশ ও প্রকৃতিভেদে ঝুঁকির রকমফের হয় অনেক। অর্থাৎ, একটি দাপ্তরিক কারবার ( Office business) প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান ঝুঁকি অবশ্যই একটি সওদাগরী প্রতিষ্ঠানে বিদ্যমান ঝুঁকি থেকে ভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। আবার, একটি শিল্প কারখানায় বিদ্যমান ঝুঁকি হবে সঙ্গতকারণে আরও ভিন্নতর।

একজন কারখানার মালিক হিসেবে যেসব ঝুঁকির জন্যে বীমা গ্রহন বিধেয়

 

একজন কারখানার মালিক হিসেবে যেসব ঝুঁকির জন্যে বীমা গ্রহন বিধেয় | ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা | বীমা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা

 

ঝুঁকি চিহ্নিতকরণ ও বিশ্লেষণের সে দৃষ্টিকোন থেকে একটি শিল্প কারখানার মালিক হিসেবে বিবেচ্য নিম্নে বর্ণিত ঝুঁকিসমূহের জন্যে বীমা গ্রহণ করা বাঞ্ছনীয় তথ্য অপরিহার্য : –

 

১। যন্ত্রপাতির মিতব্যায়ী ব্যবহারের ব্যর্থতা (Fallure of machinery to function economically) :

অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকেই পরিদৃষ্ট যে, অনেক শিল্প কারখানায় যন্ত্রপাতি ব্যবহারের ক্ষেত্রে এবং যন্ত্রাদি ব্যবহার করতে গিয়ে মিতব্যয়িতা রক্ষায় ব্যর্থতার পরিচয় দিয়ে থাকে। কখনও অনভিজ্ঞ ব্যবহার, কখনও মাত্রাহীন ও যথেচ্ছ – এমনকি, কৃপন ব্যবহার ও অধিক ব্যয়ও অকাল-বনষ্টিজনিত আর্থিক অমিতাচারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যেমন : — কম বেতনভুক কর্মচারী দিয়ে মূল্যবান যন্ত্র ব্যবহারের স্বাভাবিক কুফল হিসেবেই তা হতে পারে। আবার, অধিক প্রাপ্তির আশায় এক নাগাড়ে অতিমাত্রিক ব্যবহারের ফলেও কোন যন্ত্রপাতি নির্ধারিত আয়ুষ্কালের আগেই নষ্ট হয়ে যেতে পারে যা প্রকারান্তরে একটি আর্থিক অমিতাচারের কারণ হয়ে পড়ে। কারখানার মালিককে এ ধরনের ঝুঁকির বিরুদ্ধে বীমা গ্রহণ করতে হয়।

 

insurancegoln Google news
গুগল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

২। ধর্মঘট বা অন্যান্য শ্রম সঙ্কট অথবা বিরোধ (Strike or other labour troubles) :

শিল্প কল-কারখানায় ধর্মঘট বা এ জাতীয় আরও অনেক শ্রম বা শিল্প অসন্তোষ একেবারেই স্বাভাবিক কতিপয় অনুপেক্ষেয় সমস্যা যা উৎপাদনের ক্ষেত্রে অনেক অনিশ্চয়তা ও ক্ষতির কারণ হয়ে থাকে। তাই, এ জাতীয় ঝুঁকির বিরুদ্ধেও কারখানা মালিককে বীমাপত্র গ্রহণ করতে হয়।

 

৩। কারিগরী সমস্যা নিরসনে ব্যর্থতা (Fallure to solve technical problems) :

কখনও কখনও কারখানার যন্ত্রপাতি বা উৎপাদন সংক্রান্ত অনেক কারিগরী সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। যেমন : কোন যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ বিকল বা নষ্ট হয়ে যেতে পারে, কোন উৎপাদন প্রক্রিয়ায় জটিলতা দেখা দিতে পারে যা উন্নত কারিগরী জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দ্বারাই নিরসন করা সম্ভব। হতে পারে এমন যে, তা বাইরে থেকে কোন দক্ষ কারিগর না আনা পর্যন্ত ঠিক বা নিরসন করা সম্ভব নয় এবং এমনও হতে পারে যে, তা আদৌ নিরসন সম্ভব নয়। এতে কারখানার তথা প্রতিষ্ঠানের অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। তাই, এরূপ আর্থিক অনিশ্চয়তা বা ঝুঁকির বিরুদ্ধে কারখানার মালিক হিসেবে বীমা গ্রহণ করা দরকার।

 

একজন কারখানার মালিক হিসেবে যেসব ঝুঁকির জন্যে বীমা গ্রহন বিধেয় | ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা | বীমা ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা

 

৪। কাঁচামাল ফুরিয়ে যাওয়া (Exhaustion of raw material resources) :

কারখানায় কাঁচামাল সরবরাহ বা যোগানের ক্ষেত্রে যে কোন সময়ে সমস্যা বা অনিশ্চয়তা অথবা কাঁচামালের অভাব সৃষ্টি হতে পারে। বিভিন্ন কারণে তা হতে পারে। যেমনঃ সংগ্রহস্থলে অথবা পথে যুদ্ধ-বিগ্রহ বা অন্যবিধ সমস্যা, দেশের অভ্যস্তরে বা এলাকায় রাজনৈতিক সংঘাত, প্রাকৃতিক বিপর্যয়, কাচামালের উৎপাদনে সাময়িক হ্রাস, সংশ্লিষ্টদের অসতর্কতা ইত্যাদি কারণে কাঁচামাল ফুরিয়ে যেতে বা কাচামালের অভাব সৃষ্টি হয়ে যেতে পারে যা অনেক সময় অনেক ক্ষতির কারণ হতে পারে। ভাই, এতজনিত ঝুঁকির বিরুদ্ধেও কারখানা মালিককে বীমা গ্রহণ করতে হয় ।

এ ছাড়াও, অগ্নি বিপর্যয়, শ্রমিক মৃত্যু, উৎপাদন, ক্রয়, বিক্রয় ইত্যাদি সংক্রান্ত আরও বহুবিধ ছোট বড় ঝুঁকির সৃষ্টি হতে পারে যার বিরুদ্ধেও বীমা গ্রহণ করা কারখানা মালিক হিসেবে অনেক সময়ে এবং ক্ষেত্রে অপরিহার্য বলে পরিগণিত হয়।

 

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment